সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মাদারীপুরে গরীব দুঃখী ও মেহনতি মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন খোন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য “রিটায়ার্ড অফিসার্স সাপোর্ট সেল” এবং “রিটায়ার্ড অফিসার্স সাপোর্ট পোর্টাল” উদ্বোধন কলাপাড়ায় নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত হয়েছে শেরপুর জেলা পরিষদে প্রকল্পের চেক বিতরন শেরপুরে বিপিএটিসির প্রশিক্ষণার্থীদের জেলা সংযুক্তির উদ্বোধন মেলান্দহ বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মুত্যু উপকূলীয় এলাকার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কৃষকদের বাজার সম্প্রসারণ লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মাদারীপুরে একজন মাদ্রাসা ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু ১০০০০ পিস ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নরসিংদীতে নতুন পুলিশ সুপার যোগদানের পরে সকল পুলিশ অফিসার গন আন্তরিক হয়ে কাজ করার সফলতা!

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ দিয়ে কৃতি শিক্ষার্থী সম্বর্ধনা,পাশেই উপজেলা পরিষদের হলরুম

মোঃ আল আমিন মল্লিক, স্টাফ রিপোর্টার

সংবাদটি শেয়ার করুন....

বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো মাসুদ উর রহমানের  বিরুদ্ধে একনায়কতান্ত্রিক আচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর আয়োজিত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান একযোগে বয়কট করেছে স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক মহল। এ ঘটনায় পুরো উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

 

জানা যায়,  ২৯ জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রোজ মঙ্গলবার  বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে সম্মাননা জানানোর কথা থাকলেও শুরুতেই তা বিতর্কের জন্ম দেয়। অভিযোগ, একাডেমিক সুপারভাইজার একক সিদ্ধান্তে  বেতাগী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ দিয়ে সেখানে আয়োজন করে কৃতি শিক্ষার্থী সম্বর্ধনা,অথচ এধরনের  সরকারী দপ্তরের অনুষ্ঠানের জন্য রয়েছে উপজেলা পরিষদের হলরুম, এছাড়া এ অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মী বা রাজনৈতিক দলের কোনো প্রতিনিধিকেই আমন্ত্রণ জানাননি।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা দেয় সাংবাদিক সংগঠনগুলো। এ সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে বেতাগী উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মেহেদী হাসান কোয়েল সিকদার বলেন, “আমরা অনুষ্ঠানটি বয়কট করেছি কারণ তিনি কোনো সাংবাদিক সংগঠন বা রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাননি। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সরকারের যে আচরণ, তিনি আজ সেই আচরণেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। আমাদের স্পষ্ট দাবি, এই একাডেমিক সুপারভাইজারকে অনতিবিলম্বে বেতাগী থেকে বদলি করতে হবে।”

সাংবাদিকদের এই বয়কটের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে বেতাগী প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামাল হোসেন খান বলেন, “গণমাধ্যমকে পাশ কাটিয়ে কোনো সরকারি অনুষ্ঠান হতে পারে না। এটি শুধু দৃষ্টিকটূ নয়, এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এমন অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে রিপোর্টার্স ইউনিটির বয়কটের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক এবং আমরা এর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।”

একইভাবে, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. শাহাদাত হোসেন মুন্না এই ঘটনাকে ‘চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের এই সাহসী বয়কটকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি কেবল আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয় নয়, এটি একটি অগণতান্ত্রিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক সমাজকে বাদ দেওয়াটা চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”

একই সুরে কথা বলেছেন বেতাগী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান খান। তিনি বলেন, “আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। এই শিক্ষা কর্মকর্তা এর আগেও দ্বিমুখী চরিত্র দেখিয়েছেন। আমরা এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ।”

এদিকে, অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে সার্বিক পরিস্থিতি জানার পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিপুল শিকদার। তিনি বলেন, “আমি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার পর বিষয়টি জানতে পারি। গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের ছাড়া এমন একটি আয়োজন অত্যন্ত দুঃখজনক এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়। অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই সম্মিলিত বয়কট ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার এমন প্রতিক্রিয়ার ফলে অভিযুক্ত একাডেমিক সুপারভাইজারের অবস্থান বেশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ