সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মাদারীপুরে গরীব দুঃখী ও মেহনতি মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন খোন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য “রিটায়ার্ড অফিসার্স সাপোর্ট সেল” এবং “রিটায়ার্ড অফিসার্স সাপোর্ট পোর্টাল” উদ্বোধন কলাপাড়ায় নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত হয়েছে শেরপুর জেলা পরিষদে প্রকল্পের চেক বিতরন শেরপুরে বিপিএটিসির প্রশিক্ষণার্থীদের জেলা সংযুক্তির উদ্বোধন মেলান্দহ বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মুত্যু উপকূলীয় এলাকার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কৃষকদের বাজার সম্প্রসারণ লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মাদারীপুরে একজন মাদ্রাসা ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু ১০০০০ পিস ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নরসিংদীতে নতুন পুলিশ সুপার যোগদানের পরে সকল পুলিশ অফিসার গন আন্তরিক হয়ে কাজ করার সফলতা!

কলাপাড়ায় নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত হয়েছে

মোঃ কবির তালুকদার ,(পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি)

সংবাদটি শেয়ার করুন....

অদ্য ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রোজ রবিবার কলাপাড়ায় নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে একশন এইড বাংলাদেশ ও জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেটনেট বিডি) এর সহয়োগিতায় সদস্য সংগঠন প্রান্তজন  ও কলাপাড়া পরিবেশ ও জনসুরক্ষা মঞ্চ এর আয়োজনে র‍্যালী ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

সকাল ১১ টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাব চত্বর থেকে র‍্যালী শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আন্দারমানিক নদীর তীরে হেলিপ্যাড মাঠে শেষ হয়। র‍্যালী শেষে পরিবেশকর্মী মেজবাহউদ্দিন মান্নুর সভাপতিত্বে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

পথসভায় আরো আলোচনা করেন, কলাপাড়া পরিবেশ ও জনসুরক্ষা মঞ্চের সদস্য মিলন কর্মকার রাজু, কবির তালুকদার, মোঃ নজরুল ইসলাম এবং প্রান্তজন এর ফিল্ড কোর্ডিনেটর সাইফুল্লাহ মাহমুদ।

 

মানবস্বাস্থ্য রক্ষার্থে বায়ুর গুণগত মানোন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৯ সালে দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্তগ্রহণ করে।
জীবনের জন্য নির্মল বায়ু’র প্রয়োজনীয়তা, বিশ্বব্যাপী প্রতিনিয়ত সংঘটিত বায়ুদূষণ, মানবজীবন ও পরিবেশের ওপর বায়ুদূষণের চরম প্রভাব এবং বর্তমান বিশ্বে বায়ুদূষণের মারাত্মক অবস্থা ও এর থেকে আশু উত্তরণের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘ ‘নীলাকাশের জন্য নির্মল বায়ু’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক দিবস নির্ধারিত করেছে।

 

১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর পৃথিবীব্যাপী উক্ত দিবস প্রতিপালিত হয়।

 

পথসভায় কলাপাড়া পরিবেশ ও জনসুরক্ষা মঞ্চের সদস্য জনাব মিলন কর্মকার রাজু বলেন বায়ুদূষণ বর্তমান বিশ্বে প্রথম পাঁচটি মৃত্যুকারণের একটি; সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে অকাল মৃত্যুবরণ করে, যা অন্য যেকোনো পরিবেশগত দূষণে সংঘটিত মৃত্যু সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, বায়ুদূষণ জনিত অসুস্থতায় মানুষের কর্মক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পায় যার আর্থিক মূল্য অপরিসীম।

 

 

মঞ্চের সদস্য জনাব কবির তালুকদার বলেন শঙ্কার বিষয় এই যে, বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব শুধু মানব স্বাস্থ্যের ওপরই সীমাবদ্ধ নয়; জীবজগত ও উদ্ভিদের ওপরেও এর প্রভাব মারাত্মক। উপরন্তু, জলবায়ু পরিবর্তনে বায়ুদূষণ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে, বিশেষ করে কালো—কার্বন ও ওজন জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখায় এদেরকে ‘শর্ট লিভট ক্লাইমেট প্লুট্যান্টস’ বলা হয়ে থাকে।

 

বায়ুদূষণের এমন সব বহুমাত্রিক ক্ষতিকর প্রভাব থাকা সত্তেও এখন পর্যন্ত এটি নিয়ন্ত্রণে কোনো আন্তর্জাতিক ট্রিটি বা সমঝোতা নেই। এমন বাস্তবতায়, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী জন—রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। সে নিরিখে, নির্মল বায়ুর জন্য উৎসর্গীকৃত আন্তর্জাতিক দিবসটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।

 

 

প্রান্তজনের ফিল্ড কোর্ডিনেটর সাইফুল্লাহ মাহমুদ বলেন সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, পৃথিবীর জনগোষ্ঠীর ৯০%—ই এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সংজ্ঞায়িত অনিরাপদ বায়ুতে বসবাস করে। কোনো কোনো অঞ্চলের, বিশেষ করে আমাদের এশিয়া মহাদেশের বায়ুদূষণের চিত্র আরো ভয়ংকর; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পৃথিবীর প্রায় ১৬০০টি শহরের বায়ুমান মাত্রা পর্যালোচনা করে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে তার প্রথম ২০টি অধিক দূষিত শহরের সবগুলোই আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার।

 

যদিও বাংলাদেশের শুধু নারায়ণগঞ্জ উক্ত ২০টি শহরের অন্তর্ভুক্ত। এমতাবস্থায়, রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভাবে আইন, চুক্তি/সমঝোতার মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ করার বিকল্প নেই। এর জন্য বাংলাদেশ সরকার যে খসড়া ‘ক্লিন এয়ার অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেছে তা দ্রুততার সাথে চূড়ান্ত করে আইন আকারে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

 

 

সভায় অন্যন্য বক্তরা বলেন বায়ু দূষণ কোনো দেশের সীমানা মেনে চলে না। এটি তুলনামূলকভাবে নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। প্রতিবেশ ব্যবস্থার উপরও বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। অনেক বায়ু দূষণ জলবায়ু সংকটে সরাসরি প্রভাব রাখে। অপরদিকে, বায়ুর গুণগত মানোন্নয়ন জলবায়ু সংকট প্রশমনে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।

 

 

পথসভা থেকে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়ঃ

১. ন্যায্য জ্বালানির অঙ্গীকার, নির্মল বায়ু সবার অধিকার
২. কলাপাড়ায় আশুগঞ্জ কোম্পানির জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিতে জীবাশ্ম জ্বালানীর পরিবর্তে সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে হবে।
৩. পায়রা ৫০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. পায়রা ১৩২০ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (২য় ফেইজ) বাতিল করতে হবে।
৫. ক্লিন এয়ার অ্যাক্ট’ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
পথসভায় অংশনেয়া সুশিল জমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় স্কুল—কলেজের শিক্ষার্থী, এনজিও কর্মী, নারী সংগঠনের সদস্য, কৃষক, সাংবাদিক, পরিবেশ কর্মী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারে লিখে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ