কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাতভাঙ্গা ইউনিয়নের আমবাড়ি এলাকায় আবাদি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে এই অভিযান পরিচালনা করেন রৌমারী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল কুমার হালদার। অভিযানে মাটি বোঝাই একটি ট্রাক্টর কাকড়া গাড়ি জব্দ করে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আমবাড়ি এলাকায় একটি অসাধু চক্র স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে আবাদি জমি থেকে ভেকু মেশিন (এক্সকাভেটর) দিয়ে মাটি উত্তোলন করে আসছিল। নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়তই ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে তা বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে বিক্রি করছিল।
অভিযানের সময় মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন,
“ফসলি জমির মাটি কাটা সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি কৃষিজ উৎপাদনে বড় প্রভাব ফেলে। আজ আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছি। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন,
“আজকের অভিযানে একটি মাটি বোঝাই ট্রাক্টর কাকড়া গাড়ি আটক করে থানায় আনা হয়েছে। আমরা যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
স্থানীয় দাতভাঙ্গা এলাকার এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“সারা বছর ধরে এমনভাবে আবাদি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনো দিন প্রতিবাদ করে না। প্রশাসনও এতদিন চুপ ছিল। এখন বর্ষা চলে আসছে, তখন এমনিতেই মাটি কাটা বন্ধ হয়ে যাবে। আজকের অভিযানটা আমাদের কাছে লোক দেখানো মনে হয়েছে। আমরা চাই এই মাটি কাটা স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক।”
উল্লেখ্য, কৃষিজমির মাটি কাটা পরিবেশ ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। এতে জমির উর্বরতা কমে যায়, ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই এলাকাবাসী চায়, শুধু অভিযানই নয়, কঠোর প্রশাসনিক নজরদারির মাধ্যমে এই অনিয়ম স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক।