মাদারীপুরে বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক রফিক মাতুব্বর এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দালালি, চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
মাদারীপুর জেলার সদরের এলাকাবাসী বলছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পতিত আওয়ামী মন্ত্রী শাজাহান খানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
এমনকি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও গ্রহণ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। শাজাহান খানের ছোট ভাই যাচ্চু খানের সাথে থেকে রফিক মাতুব্বর সহ কিছু বিএনপি নেতা দীর্ঘ ১৫বছর চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি ভূমিদস্যু সহ সকল ধরনের অপকর্মের সাথে লিপ্ত ছিলেন যাদের চেহারা দেখলেই মাদারীপুরের সাধারণ জনগণ চিনেন এক নামে তারা আজ বুক ফুলিয়ে জাহান্দার আলী জাহান সদস্য সচিব এর সাথে থেকে বড় বড় কথা বলে সামনে জাতীয় নির্বাচনে এদেরকে উপযুক্ত জবাব দিবেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের ঘনিষ্ ছিলেন। রফিক প্রকাশ্যে শাজাহান খানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তার গ্রুপে যোগ দেন।
০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতন হলে রফিক মাতব্বর আবার নিজের চেহারা পরিবর্তন করে বিএনপির অনেক বড় নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করেন।
নিয়মিত যাতায়াত করেন থানা থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে । কাউকে পুলিশ দিয়ে ধরানো বা কোন আসামিকে ছাড়ানো রফিকের বা হাতের খেলা।
বর্তমানে তিনি থানার অন্যতম “এক নম্বর দালাল” হিসেবে পরিচিত। হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু মাতুব্বর ও তার ক্যাডার, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইব্রাহিম মাতুব্বর গং এর মুল প্রশ্রয়দাতা হিসেবে এই রফিকের নাম উঠে এসেছে ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী দোসরদের যোগসাজশে বিএনপি’র সাবেক নেতা রফিক চাঁদাবাজি , নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন , ভূমি দখলবাজি ও অন্যান্য অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া, মাদারীপুর জেলা বিএনপি’র সিনিয়র নেতা খন্দকার মাশুকুর রহমানকে নিয়ে অপপ্রচার চালানোর নেপথ্য হোতা হিসেবে ও রফিক কাজ করেন মাতুব্বরের নাম উঠে এসেছে এমনকি আরো জানা যায় মাশুকুর রহমান মাসুকের সাথে যারা চলাফেরা করেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন।
জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতা জাহান্দার আলী জাহান এর ভগ্নীপুত্র পরিচয় ব্যবহার করে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, এ ধরনের আওয়ামী দোসর ও চাঁদাবাজ ব্যক্তিরা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে রফিকের মত নেতাদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। ” যেখানে এক কেন্দ্রীয় নেতা এ সমস্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, রফিকের ভয়ে তার বিরুদ্ধে অনেকেই মুখ খুলতে চায় না। রফিক সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করলেই স্থানীয়রা এড়িয়ে যায় ভয়ে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ও বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে বলেছেন, এরকম রফিক দলের মধ্যে কিছু লোক থাকলেই দল ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি’র এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, রফিকে মাতুব্বরের সমস্ত তথ্যই আমাদের কাছে আছে। যে লোক শাজাহান খানের পায়ে হাত দিয়ে সালাম দিয়ে তার গ্রুপে যোগ দিয়েছে এই সমস্ত লোক বিএনপিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
এছাড়াও মাদারীপুর রফিকের মাতব্বরের মতো লোকদের যারা প্রশ্রয় দিবে তাদের বিরুদ্ধেও দল কঠোর সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানিয়েছেন এক কেন্দ্রীয় নেতা।