বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি না দিলে সাময়িকভাবে পেট্রাপোল স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এতেও কাজ না হলে নতুন বছর থেকে স্থলবন্দর পুরোপুরি বন্ধ করে ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসা বন্ধ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার বাংলাদেশের যশোরের বেনাপোল বন্দরের ওপারে পশ্চিমঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার বৃহত্তম আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর পেট্রাপোলে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সমাবেশে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আজকে সিনেমার ট্রেলার দেখিয়ে গেলাম। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না হলে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাস মুক্তি না পেলে পাঁচ দিন স্থলবন্দর বন্ধ থাকবে। তারপর ২০২৫ সালে লাগাতার বন্ধ করে দেওয়া হবে। আলু-পেঁয়াজ কী করে যায়, তা আমরা দেখব। আমাদের নাম ভারতবর্ষ।’
শুভেন্দু অধিকারী যখন এই সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তার কিছুক্ষণ আগে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বক্তব্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র রাষ্ট্রপুঞ্জের (জাতিসংঘ) কাছে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর আরজি জানাক।’ এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাবও তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে দেবেন বলে জানান।
Today I participated in a Protest March & Rally held at Petrapole, North 24 Parganas; the largest international checkpost on the India-Bangladesh border.
Thousands of Monks, Devotees of ISKCON and general Sanatani People gathered to protest against the arrest of spiritual leaders… pic.twitter.com/lZWEoamp8a— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) December 2, 2024
সমাবেশে বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘হিন্দুরা জোট বাঁধছে এবং সেই কারণে ভয় পাচ্ছেন (মমতা)।’ এরপর তিনি গণসমাবেশে উপস্থিত লোকজনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করবেন তো? আপনারা লড়াই করবেন তো?’ বিজেপি নেতা শুভেন্দু সেখানে হিন্দিতেও স্লোগান দেন।
পরে শুভেন্দু অধিকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মতো আধ্যাত্মিক নেতাদের গ্রেপ্তার, হিন্দুদের ওপরে লাগামহীন অত্যাচার এবং বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হাজার হাজার ভিক্ষু, ইসকনের ভক্ত এবং সাধারণ সনাতনী মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। আমরা দাবি করছি, প্রতিবেশী দেশ এবং এটির অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই হিন্দুধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।’
পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দিন ধরেই ছোট ছোট বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মিছিল চলার পর আজ ত্রিপুরায় সহকারী হাইকমিশনে এ হামলা হলো। এর আগে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনেও পরপর কয়েক দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা।