বৈষম্য বিরোধী নেত্রীর উপর হামলার ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলীকে। ৩১ শে মে শনিবার বিকালে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এই আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম।
তিনি জানান, জনস্বার্থে ও প্রশাসনিক কারণে নগরকান্দা থানার ওসি মো: সফর আলীকে থানা থেকে ফরিদপুর পুলিশ লাইনস-এ সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক দিক নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠলেও দলমত নির্বিশেষে প্রকৃত হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন মারধরের শিকার নেত্রীসহ বৈষম্যবিরোধী সকল নেতৃবৃন্দ। বৈশাখী ইসলাম বর্ষা নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া গ্রামের সাবু শেখের মেয়ে। সে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক এবং সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
ছোট বোনকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করাযর কারনে শুক্রবার বিকালে তার ওপর হামলা করে স্থানীয় সেকেন কাজী ও তার ছেলে সাগর কাজীসহ আরও কয়েকজন। তখন পুলিশের ওপরও হামলা চালায় উত্তেজিতরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে সেখানে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধীর নেতারা। তখন তাদেরকে ধাওয়া দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, হামলাকারী সেকেন কাজী ও সাগর কাজী পূর্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেনের সমর্থক ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার সমর্থক পরিচয় দেন।
শনিবার দুপুরে বর্ষার বাড়িতে ছুটে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তখন নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বর্ষা তাদের বলেন, হামলাকারীরা যে দলেরই হোক বিচার করতে হবে। বিএনপির বা আওয়ামী লীগের হলেও বিচার করতে হবে।
তখন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যা দাবি করেন হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কর্মী। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কেউ যদি বলতে পারে বিএনপির লোক আমার যে শাস্তি হয় মেনে নেব। হামলাটা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাই করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বরত) আসিফ ইকবাল জানান, এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও ঘরবাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় দুটি মামলায় বাদী হয়েছেন বৈশাখী ইসলাম বর্ষা। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে থানা পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় উত্ত্যক্তকারী শরিফ বেপারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।