স্টাফ রিপোর্টার
মোঃ আনিচুর রহমান
শবে মেরাজ ফার্সি শব্দ। শব অর্থ রাত; আর মেরাজ অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ বা ঊর্ধ্বগমন। আরবিতে এ রাত্রিকে বলা হয় ‘লাইলাতুল মেরাজ’ মহিমান্বিত রজনি। শবে মেরাজ মানে ঊর্ধ্বগমনের রাত। মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে ঊর্ধ্বজগতে ভ্রমণ করেছিলেন; সেই রাতকে শবে মেরাজ বলা হয়। আরবি ভাষায় একে বলা হয় লাইলাতুল মেরাজ।
মেরাজ কোরআন-হাদিস ও ইজমায়ে উম্মত-এর অকাট্য দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত। এ রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে কোনো মুসলমানের সন্দেহ নেই। এ ঘটনার পর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক বছর সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও শবে মেরাজ কেন্দ্রিক কোনো আমলের ব্যাপারে বিশেষ হুকুম দেননি। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বিশেষ আমল করেননি।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তিরোধানের পর প্রায় ১০০ বছর সাহাবায়ে কেরাম জীবিত ছিলেন। তারা ২৭ রজবকে বিশেষভাবে উদ্যাপন করেছেন বলে একটি ঘটনাও পাওয়া যায়নি। যে কাজ রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি, সে কাজ সাহাবায়ে কেরামও পরিহার করেছেন। সুতরাং ২৭ রজবে কোনো আমলকে দীনের অংশ মনে করা, সুন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হাদিস ও সুন্নতসম্মত নয়। এটাকেই বেদয়াত বলা হবে।
মেরাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন
لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا অর্থ: (মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল) তাকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্যে। (সুরা বনি ইসরাঈল ১)
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে অসংখ্য বড় বড় নিদর্শন দেখেছেন। মানব জাতির পিতা আদম (আ.) কে দেখেছেন। তার ডানপাশে ছিল শহীদদের (জান্নাতিদের) রুহ এবং বামপাশে ছিল জাহান্নামিদের রুহ।
বিস্ময়ের কথা হচ্ছে, দেশে ২৬ রজব দিবাগত রাত বা ২৭ রজবের রাতটিকে ‘শবে মেরাজ’ হিসেবে পালন করা হয়। অথচ মেরাজের ঘটনা রজবের ২৭ তারিখেই হয়েছিল এটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। তারিখটি বর্ণনার সনদ বিশুদ্ধ নয়। মেরাজ কবে হয়েছিল সে সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য সনদে শুধু এটুকু পাওয়া যায় যে, তা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু কোন দিন, মাস বা তারিখে সংঘটিত হয়েছে এ ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কিছুই নেই।
ইসলামি শরিয়তে মনগড়া আমলের সুযোগ নেই। বরং কোরআন ও সুন্নাহর আলোকেই আমল করতে হবে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে দীনের মধ্যে নতুন কিছু তৈরী করবে যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারি ২৬৯৭)
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...