পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে
দেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনপ্রধান সফর রাজ
হোসেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ
দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান
তিনি।
সরকারি, আধা সরকারি কিংবা ব্যাংকের চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন
করতে হয় জানিয়ে সফর রাজ হোসেন বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই
পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে। ব্রিটিশ
আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন এবং তদন্ত করা হয়।
এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়। আরেকটি বিষয় প্রচলিত
আছে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কিনা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ
আছে কিনা। এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো।
সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ এসেছে যে কারো আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে
কিন্তু সরকারি দল করে না তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখে চাকরি
দেওয়া হয়নি। দেখা গেছে রাজনৈতিকভাবে তাদের খালা, ফুফা বা অন্য কেউ
রাজনীতিতে জড়িত। পরিবারের কেউ না হলেও তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত
হয়েছেন। আমরা এই প্রথাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছি।
তিনি বলেন, ব্যাংকের একজন গার্ড থেকে ক্লার্ক সবার চাকরি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক
সময় নাম পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে। পরবর্তীতে দেখা
যেতে পারে যে সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন
জরুরি। যেভাবেই হোক এ পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাতে ভোগান্তি না হয় সেই
বিষয়ে সুপারিশ করেছি। পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে কিন্তু সেখানে
আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না।
সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা পুলিশ সংস্কার কমিশনের সব সদস্য স্বরাষ্ট্র
উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ থেকে আমরা
কাজ শুরু করেছি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার
কথা রয়েছে। আমরা মোটামুটি মধ্য সময় এসেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু
কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়।
তিনি বলেন, আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময়ে
বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এ ছাড়া কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে
দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে।