কুড়িগ্রামে এক বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা হয়ে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ফুলকার চর,শান্তির চর, কাজাইকাটা, চর কাজাইকাটা, খরানিয়ার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগসহ ২৫ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছিল। তবে রাস্তা খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে এক বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ওই প্রতিষ্ঠান। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বন্দের মোড় থেকে পশ্চিম দিকে আনন্দবাজার হয়ে তেলির মোড়ের সড়কের দৃশ্য এটি।
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসলেও তাদের অভিযোগ কর্ণপাত করেননি কর্তৃপক্ষ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলা শহরের সাথে ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগের জন্য পুরাতন হেরিং রাস্তার ইট তুলে সেটির কার্পেটিং (পাকাকরণ) কাজের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের-৩ এর আওতায় ২ হাজার মিটার কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। কাজের দরপত্র পায় মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কয়েক মাস ধরে রাস্তা খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যান।
গত বছরের এপ্রিল মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও বাকি কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেই ঠিকাদারের। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফায় চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার (১ মে ) সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরোনো হেরিং সড়কটি খুঁড়ে কেবল খোয়া ফেলে রেখে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকার যানবাহন চলাচলের ফলে খোয়া ভেঙে গিয়ে ধূলায় পরিণত হয়েছে। ধুলা মাখা পথ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে মালবাহী পরিবহনসহ যাত্রী বহনকারী পরিবহনগুলি। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের ব্রেক চাপলে চাকা পিছলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এই রাস্তাটি যখন পাকা করুন শুরু হয় তখন খুব আনন্দ হচ্ছিল এই ভেবে যে, আমাদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর হচ্ছে। কিন্তু পাকা করন কাজ শুরু হওয়ার পর দুঃখ আরো বেড়ে গেছে। কারণ আগেই আমরা মোটামুটি এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করতে পারতাম। এখনতো মোটেই যাওয়া- আসা করা যায় না। আমরা এই রাস্তাটি অতি দ্রুত সমাধান চাই। ‘
কথা হয় ভ্যানচালক আহসান হাবীবের সাথে,তিনি বলেন, ‘এই সড়কটি এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে আমরা এখন চলাচলও করতে পারতেছি না, আবার বিকল্প কোন রাস্তাও আমাদের নেই। তাই প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করি। এখনতো ভাঙাচোরা রাস্তায় ধুলাবালি উপেক্ষা করে কোনোরকম যাতায়াত করতেছি, বর্ষার সময় একেবারে চলাচল করা যায় না। ‘