পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
কলাপাড়ার বাজারে এখন বেশীর ভাগ চালের চেয়ে আলু বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে মোটা ও মাঝারি ধরনের চালের দামকে ছড়িয়ে গেছে নতুন পুরানো আলুর দাম। ক্ষেত্র বিশেষে সরু চালের দামকে ও অতিক্রম করেছে আলু। অথচ মৌসুম শুরু হওয়ার পর বাজারে নতুন আলু এসেছে। কিন্তু পুরানো আলুও এখনো বাজারে আছে। তবু আলুর দাম কমছে না। একই সঙ্গে শীতের মৌসুমের অন্যান্য সবজির দামও এখনো চড়া। গতকাল সোমবার কলাপাড়া পৌরসভা, বানাতিবাজার,বাবরাতলা, চাপলী বাজার, মহিপুর, নোমরহাট,বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি নতুন ও পুরানো আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে উভয় ধরনের আলুর দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে । সাধারণত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে নতুন আলু আসে এবং এরপর এর দাম কমতে শুরু করে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরকারী সংস্হা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের ( টিসিবি) বাজার দর অনুযায়ী, কলাপাড়া উপজেলার সকল বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম এখনো ৬০/৬৫ টাকা। মাঝারি চাল পাওয়া যায় ৭০/৭৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৮৫ থেকে ৯০ টাকা পড়ছে কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আলুর দাম সরু চালের দাম ছাড়িয়ে গেছে । তবে টিসিবির প্রতিবেদনে যে সরু চালের হিসেব দেয়া হয়। তার বাইরেও প্যাকেটজাত সরু চাল বাজারে পাওয়া যায়। এই চাল প্রতি কেজি সরু চাল ৯৫_১০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব চাল মুলত উচ্চবিত্তরা কিনে থাকেন।
টিসিবি পরিসংখ্যান বিশ্লেষনে দেখা যাচ্ছে, এক বছর আগে খুচরা বাজারে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের দাম এখনকার মতোই ছিল। তবে গত বছরের এই সময়ে আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ২০/২২ টাকা। টিসিবির হিসেবে গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ২৩০ শতাংশ।
কলাপাড়া পৌর শহরের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন হাওলাদার বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে হিমাগারে থাকা পুরোনো আলু শেষ হয়ে যায়। এবং নতুন আলু বাজারে আসতে শুরু করে। প্রথম দিকে এর দাম বেশি থাকে। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে থেকে আলুর দাম কমতে শুরু করে। তবে এবার আলুর আগাম ফলন কিছুটা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এর দাম কমছে না।
আলুর মত পেয়াজের বাজার এখনো অনেক চড়া। অসাধু কিছু ব্যবসায়ীরা বাজারে পেয়াজের সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে পেয়াজ বিক্রি করছে। প্রতি কেজি পুরানো পেঁয়াজ বিক্রি করছে ১৫০/১৭৫ টাকায়, আর নতুন পেয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি করছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়।
শীতের শুরুতে বেশির ভাগ সবজির দাম কমতে শুরু করলেও সবজির বাজার আবার চড়ে গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা,শিম প্রতি কেজি ৮৫ টাকা, টমোটো ৯০থেকে ১০০ টাকা,ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিচ ৬০/৬৫ টাকা,লাউয়ের পিচ প্রকার ভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলার কেজি ৮০_৮৫ টাকা,হাতে গোনা দুই একটি ৪০/৪৫ টাকায় পাওয়া যায়।
এর মধ্যে রয়েছে পেপে, মুলা এবং ওলকপি।
আটা ময়দা, ডাল ,তেলের মতো পন্য আগেই উঁচু দামে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের দাম কমেনি। কমেনি মাছ মাংসের দামও। ব্রলার মুরগির কেজি ২২০ টাকা,আর সোনালী মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা,গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। খাসির মাংসের কেজি ৮০০/৯০০ টাকা। ফার্মের মুরগি বাদামী ও সাদা ডিমের ডজন প্রতি ১৬০/১৭০ টাকা, চাষের রুই মাছের প্রতি কেজির দাম ৩৫০-৪০০ টাকা। মানভেদে ও তেলাপিয়া ২০০-২৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যায়। কলাপাড়া মাছ বাজারের ক্রেতা আমির হোসেন মল্লিক বলেন,মাছ মাংসের দাম আগে থেকে বেড়ে ছিল। সেটা না হয় মেনে নিলাম। এ সময়ে শীতের সবজির দাম কেন বাড়ছে, তার তো কোনো হিসেব নিকেশ তো পাই না। আমরা গরীব অসহায় মানুষ মাছ মাংসের তো আমাগো ভাগ্যে জুটে না।আলুর ভর্তা দিয়ে ভাত খামু তাও জুটে না কপালে।