কোরবানির ঈদ আমাদের মাঝে ত্যাগের মহিমা আর ভালোবাসার বার্তা নিয়ে আসে। এই দিনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করেন। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করার বিধান রয়েছে – এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য। এই বিধানের মধ্যেই নিহিত আছে সামাজিক সমতা ও সহমর্মিতার এক গভীর শিক্ষা।
আমাদের সমাজে বিত্তবানদের জন্য কোরবানির ঈদ মানে পরিবারের সকলে মিলে ভালো খাবার উপভোগ করা, নতুন পোশাকে আনন্দ করা। কিন্তু এই ঈদের দিনটিতেও এমন অনেক অসহায়, হতদরিদ্র মানুষ ও পথশিশু থাকে, যাদের ভাগ্যে এক টুকরা মাংসও জোটে না। তাদের কাছে ঈদের আনন্দ মানে শুধু অন্যের আনন্দ দেখা, ক্ষুধা নিয়ে দিন কাটানো। সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে এই বৈষম্য আমাদের বিবেককে নাড়া দেওয়া উচিত।
কোরবানির মূল উদ্দেশ্য কেবল মাংস বিতরণ নয়, বরং এর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং অভাবী মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা। যখন আমরা অসহায়দের মুখে কোরবানির মাংস তুলে দিই, তখন তাদের মুখে যে হাসি ফোটে, তাতেই ঈদের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। এই ক্ষুদ্র প্রয়াস শুধু তাদের শারীরিক ক্ষুধা নিবারণ করে না, বরং তাদের মনেও ঈদের আনন্দ পৌঁছে দেয়, তাদের মনে জাগিয়ে তোলে বেঁচে থাকার আশা।
তাই, এই কোরবানির ঈদে আসুন আমরা সকলে মিলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াই। কেবল কোরবানির মাংস বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, আরও বিভিন্নভাবে তাদের সাহায্য করতে পারি। যেমন: তাদের জন্য নতুন পোশাকের ব্যবস্থা করা, ঈদের দিন ভালো খাবারের আয়োজন করা, বা শিশুদের জন্য ছোটখাটো উপহারের ব্যবস্থা করা।
আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই মানুষগুলোর জীবনে ঈদের আনন্দ এনে দিতে পারে এবং সমাজে এক দারুণ ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
কোরবানির ঈদের এই মহৎ বার্তাটি যদি আমরা সবাই মিলে ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে সমাজের আরও অনেক মানুষ অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা পাবে।
কলমে: (সাবিনা ইয়াসমিন)