রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঋণ নয় ক্ষতিপূরণের ন্যায্যতার দাবিতে পাথরঘাটায় সাইকেল র‍্যালি শেরপুরে জামায়াতে ইসলামী কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত জামালপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পেল মানবিক সহায়তা সেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধনের কেন্দ্রীয় পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত দেওয়ানগঞ্জ সড়ক দূর্ঘটনায় স্কুল  শিক্ষক নিহত, আহত এক বরিশাল থেকে ঢাকা মহা সমাবেশের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা বরিশালে বিভিন্ন আনষ্ঠানিকতায় পালিত হয়েছে রথ যাত্রা উৎসব জামালপুরে বাল্যবিয়ে বিরোধী মানববন্ধন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত পাথরঘাটায় ব্রাকের উদ্যোগে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন সানন্দবাড়ী কলেজ কেন্দ্রে এইচ এস সি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত

বরিশালের বানারীপাড়ায় ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর!

ফারজানা আক্তার তন্নী , স্টাফ রিপোর্টার

সংবাদটি শেয়ার করুন....

বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলায় অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা আশ্রায়ণ প্রকল্প, ফেইস-২ এর অধিকাংশ ঘর ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, শুরুতেই ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামে। নিজের নামে জমি ও বাড়ি আছে এমন ব্যক্তিদের নামে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সচ্ছল ব্যক্তিরা ওইসব ঘরে বসবাস না করে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দের ঘরে থাকছেন তাদের স্বজনরা। অথচ প্রকৃত গৃহহীনরা ঘর না পেয়ে কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ফেইস-২ এর ঘর নির্মাণ করা হয় ২০১৩ সালে। এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প শুরু হয় ২০২০ সালে ও ঘর হস্তান্তর করা হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানের এসব প্রকল্পের প্রতিটি ঘর ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কেউ ভাড়া দিয়ে রাখছেন অন্য পরিবারের কাছে। সম্প্রতি বানারীপাড়া উপজেলার কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে বসবাসকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

 

বানারীপাড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, ফেইস-২ এর আওতায় কয়েকটি ধাপে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহস্রাধিক ঘর নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। নির্মাণকাজের মধ্যেই ঘর বরাদ্দের জন্য ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আবেদন নেওয়া হয়। আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে ধাপে ধাপে তাদের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বানারীপাড়া সদর উপজেলার উত্তরপাড় আবাসন প্রকল্পে ঘর ক্রয় করে বসবাসকারী শ্যামল মন্ডল বলেন, ৯ বছর আগে রোকেয়া বেগমের কাছ থেকে কিছু টাকার বিনিময়ে ঘর নিয়েছি। তিনি সম্পর্কে আত্মীয় হন। এখনো মাঝে মাঝে বেড়াতে আসেন।

এ ব্যাপারে রোকেয়া বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আত্মীয়, তাই থাকতে দিয়েছি। টাকার কোনো বিষয় নেই। যে টাকার কথা বলা হয়, তা সামনের বারান্দা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য খরচ হয়েছে।

একই প্রকল্পের ১৪৫ নম্বর ঘরটি বরাদ্দ মুন্নি বেগমের নামে। কিন্তু তিনি বরাদ্দ নিয়ে ভ্যানচালক রুস্তম আলীর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে অন্যত্র বসবাস করছেন। একইভাবে ফাইজুল হকের ঘর নাজমা বেগম ১ লাখ টাকায় কিনে বসবাস করছেন।

 

এদিকে বিভিন্ন জায়গায় দরখাস্ত করেও ঘর না পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ঘর কিনে বসবাস করছেন বলে জানান সোহাগ।

 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে শাহজাহান বলেন, সোহাগ তার দূর সম্পর্কে আত্মীয় হন। তাই তাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে, এখানে টাকার কোনো বিষয় নেই।

বানারীপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মহসিন-উল-হাসান বলেন, কিছুদিন আগে এখানে যোগদান করেছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি অথবা ভাড়ার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো। তাছাড়া আশ্রয়ণের ঘরগুলোর বিষয়ে এসিল্যান্ড ও ইউএনও স্যার ভালো বলতে পারবেন।

বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বায়েজিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি ও ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিয়ম বহির্ভূত। যদি কেউ ঘর বিক্রি করে থাকে কিংবা ভাড়া দিয়ে থাকে তাহলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘর বিক্রি অথবা ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করা হবে। পরবর্তীতে প্রকৃত গৃহহীনদের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ