আদালতে মামলা করায় আসামি পক্ষের হুমকি:
রাজৈরে ৮ দিন পর অপহৃত যুবক উদ্ধার, গ্রেপ্তার-১মাদারীপুরের জেলাধীন রাজৈর উপজেলার অপহৃত যুবক সুমন শেখকে (২৫) ৮ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২০ নভেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

অপহৃত যুবক সুমন শেখ
সুমন রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের ঘোষালকান্দি গ্রামের মৃত নূর
মোহাম্মদ শেখের ছেলে। তাকে আজ (২১ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলে
মাদারীপুর আদালতের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর
আগে মাদারীপুর আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী সুমনের
মা রহিমা বেগম। পরে একই গ্রামের লতিফ বয়াতিকে (৫০) গ্রেপ্তার করে রাজৈর
থানার পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী
পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আসামি পক্ষের
লোকজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে চরম আতংকে রয়েছেন তারা।
জানা যায়, গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে সুমনকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে
ঢাকা নিয়ে যায় রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট ঘোষালকান্দি গ্রামের আপন
শেখ। পরে ঢাকার একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে অপহরণকারীদের কাছে রেখে
আসে। একদিন পর সুমনের খোঁজ না পেয়ে আপনের কাছে জিজ্ঞেস করলে
তাকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আটকে রেখেছে এবং তাকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানায়।
এরই মধ্যে অপহরণকারীরা মুঠোফোনে কল দিয়ে সুমনকে মারধরের শব্দ
শুনিয়ে তার পরিবারের কাছে ৪০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে
টাকা আদায়ের জন্য এক অপহরণকারীর মোবাইল দিয়ে সুমনকে তার
পরিবারের সাথে কথা বলায়। এসময় টেকেরহাটের আপন ও লতিফ বয়াতি
জড়িত আছে বলে জানায় ভুক্তভোগী সুমন। একপর্যায়ে মাদারীপুর
আদালতে ১৮ নভেম্বর আপনকে প্রধান ও লতিফকে দ্বিতীয় আসামিসহ ৪
জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের
করেন সুমনের মা রহিমা বেগম।
পরে আপন গা ঢাকা দেয় এবং লতিফকে ১৯ নভেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে রাজৈর
থানার পুলিশ। পরে সুমনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনার পর থেকে
মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আসামি পক্ষের
লোকজন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এতে চরম আতংকে
ভুক্তভোগী সুমন শেখ জানান, আপন আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে
এক লাখ টাকার বিনিময়ে অপহরণকারীদের কাছে দিয়ে আসছে। তারা আমাকে
অনেক পিটাইছে। এর সাথে নতি বয়াতি (লতিফ বয়াতি) জড়িত আছে। কারণ
যারা আমাকে আটকাই রাখছিল তারা নতির সাথে ফোনে কথা বলছে।
সুমনের মা ও মামলার বাদী রহিমা বেগম জানান, লতিফকে গ্রেপ্তার করার পর
থেকে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিতেছে। আদালতে গিয়েও
হুমকি দিছে। যেকোনো সময় আমাদের ক্ষতি করতে পারে। আমার এতিম ছেলে
মেয়েদের নিয়ে চরম আতংকে আছি।
এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, আদালতে মামলা
হয়েছে। আমরা ভিক্টিম উদ্ধার করেছি। তবে বাদি পক্ষকে হুমকি ধামকি
দেওয়ার বিষয়ে আমি কিছু শুনি নাই, জানিও না। যদি অভিযোগ পাই তাহলে
ব্যবস্থা নেবো।