শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বগুড়ায় বিয়াল্লিশ কোটি টাকার মূল্যবান সাপের বিষ উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ এর বিশেষ অপরাধ সভা ও কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত শেরপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মালামাল গরুও মদ আটক মাদারীপুরের জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এর ভাগিনা রফিক মাতুব্বর আওয়ামীলীগ পুনর্বাসন ও যোগসাজশে চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজি অনেক অভিযোগ রয়েছে বরগুনায় কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত! ডিবি পরিচয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সাত সদস্য গ্রেফতার ! সৌদিআরব প্রবাসির স্ত্রীকে কু* পিয়ে হত্যা! বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ মায়েদের পরিদর্শনে ও তাদের জন্য কিছু আহার সামগ্রী নিয়ে জান জনাব তারেক রহমানসহ অন্য অভিযুক্তরা চুড়ান্তভাবে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন।

যেখানেই থাকুক শেখ হাসিনার বিচার হবে: প্রধান উপদেষ্টা

রিপোর্টার :
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাসস

 

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। বুধবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান সরকারের এ প্রতিশ্রুতির কথা ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘বিচার হবে, কেবল হাসিনার নয়।

 

 

তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার। তার পরিবারের সদস্য, তার সহযোগী বা দোসরদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।’ তিনি আরও জানান, হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে তারা ‘আনুষ্ঠানিক চিঠি’ পাঠিয়েছেন। তবে এখনো ‘কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া’ মেলেনি। জোর দিয়ে তিনি বলেন, হাসিনা বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকুক অথবা ভারতে পালিয়ে থাকুক তাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

স্কাই নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি কুখ্যাত গোপন বন্দিশিবির পরিদর্শন করেন। যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত। সেখানে তিনি যা দেখেছেন তাতে চরম মর্মাহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা এতটাই ভয়ংকর যে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।’

 

 

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, এসব মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে কিছুটা সময় লাগছে। তিনি বলেন, ‘এতে সবাই জড়িত ছিল। পুরো সরকারই এর অংশ ছিল। তাই কে এটা স্বেচ্ছায় করেছেন, কে আদেশ অনুযায়ী করেছেন এবং কে বাধ্য হয়ে করেছেন তা আলাদা করা কঠিন।’ নিহতদের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে কি না বা তার আমলেই তা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংযত প্রত্যাশা রাখতে বলেছেন অধ্যাপক ইউনূস।

 

 

তিনি বলেন, ‘কেউ শাস্তি পাবে, কেউ বিচার প্রক্রিয়ায় থাকবে, আবার কেউ হয়তো অধরাই থেকে যাবে।’ হাসিনা, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তার সরকারের অধীনে থাকা ৮০০টিরও বেশি গোপন বন্দিশালা পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

 

 

জাতিসংঘের মতে, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে। এর কিছুদিন পরই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ-নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশকে ব্যবহার করে তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলের শত শত কর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ হাসিনা দাবি করেছেন-তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

 

 

দুর্নীতির তদন্তেও মনোযোগ অধ্যাপক ইউনূসের : বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নি, তিনিও এই তদন্তের আওতায় রয়েছেন। অধ্যাপক ইউনূস জানিয়েছেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি গুরুতর। তিনি বাংলাদেশে প্রচুর সম্পদ রেখে গেছেন এবং সবকিছু তদন্ত করা হবে।

 

 

জানুয়ারিতে এ তদন্ত শুরু হওয়ার পর টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তবে তার একজন মুখপাত্র বলেছেন, তিনি সব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।

 

 

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলা আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ : মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছেন। যাতে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ তৈরি করা যায়। কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। যেখানে হিংসা, মাদক ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম বেড়ে গেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ উত্তেজনা সহসা কমবে না।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ