শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বগুড়ার মহাস্থানগড়ে আগমন হলো *Thoughts Of Billal*. বগুড়ায় বিয়াল্লিশ কোটি টাকার মূল্যবান সাপের বিষ উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ এর বিশেষ অপরাধ সভা ও কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত শেরপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মালামাল গরুও মদ আটক মাদারীপুরের জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এর ভাগিনা রফিক মাতুব্বর আওয়ামীলীগ পুনর্বাসন ও যোগসাজশে চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজি অনেক অভিযোগ রয়েছে বরগুনায় কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত! ডিবি পরিচয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সাত সদস্য গ্রেফতার ! সৌদিআরব প্রবাসির স্ত্রীকে কু* পিয়ে হত্যা! বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ মায়েদের পরিদর্শনে ও তাদের জন্য কিছু আহার সামগ্রী নিয়ে জান

শুধুমাত্র ওসির বাড়ির জন্য ৩২ লাখ টাকার সেতু! এলাকায় সমলোচনার ঝড়

মাদারীপুর প্রতিনিধি

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আশপাশে নেই ঘনবসতি। নেই সড়কও। তবুও পুলিশের ওসির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটি নতুন কালভার্ট সেতু।

শুধুমাত্র একটি পরিবারের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি একজন ওসি’র গাড়ি সরাসরি বাড়িতে প্রবেশের জন্য এটি

নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার অধিদফতর এলজিইডি। সেতুর সামনেই রয়েছে

ইটেবপুল পাথুবিয়াবপাড় সড়কে যানবাহন গতিরোধক। এতে চলতি পথে

যাতায়াতে অত্যাধুনিক বাড়িটি নজর কাড়ছে সবার এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে

আলোচনা- সমলোচনা।

 

 

জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ইটেরপুল থেকে

পাথুরিয়ারপাড় সড়কের পাশে ছয়না গ্রামের বরিশাল খালের উপর নির্মাণ করা

হয় কালভার্ট সেতু। অভিযোগ আছে, শরীয়তপুরের জাজিরা থানার সাবেক

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা ক্ষমতার অপব্যবহার করে

সেতুটি নির্মাণ করেছেন। নাম দেয়া হয় কামাল মোল্লার বাড়ির নিকট কালভার্ট

সেতু।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কামাল মোল্লা, পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর

রহমান মোল্লার বড়ভাই। বর্তমানে মোস্তাফিজুর রহমান রাজধানী ঢাকার উত্তরা

জোনে হাইওয়ে থানায় পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে কর্মবত রয়েছেন। জাজিরা

থানায় ওসি থাকাকালীন সময়ে মন্ত্রণালয়ে বিশেষ তদবির করে নিজের বাড়ির

জন্য এই সেতুটি পাস করিয়ে আনেন বলে অভিযোগ আছে। বিষয়টিতে কোন

অনিয়ম হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখার দাবিও জানান তারা। সরেজমিনে দেখা

গেছে, নামফলকে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬ টাকায় আবরার

এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়। এতো টাকা মূল্যে সেতু

নির্মাণ নিয়ে তৈরী হয়েছে ধোঁয়াশা। এলজিইডি সূত্র জানায়, কালভার্ট

সেতুটির চুক্তিমূল্য ৩২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হলেও নামফলকের চুক্তিমূল্য ভুল

আছে। গত অর্থবছরে এডিপি’র অর্থায়নে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক

চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান কালু খান ও উপজেলা এলডিইডি’র

প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরিত কাগজে কাজটি বাস্তবায়ন হয়। এ

বিষয়ে জানতে উপজেলা এলজিইডি অফিসে গিয়ে প্রকৌশলীকে পাওয়া যায়নি,

আর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একটি হত্যা মামলার আসামী হওয়ায়

এলাকাছাড়া থাকায় তারও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইজিবাইক চালক নয়ন মিয়া বলেন, সেতুটি নির্মাণ করেছে ক্ষমতার অপব্যবহার

করে। একটি বাড়ির জন্য একটি ব্রিজ কখনই প্রয়োজন হয় না। ক্ষমতা আছে

এজন্যই করা সম্ভব হয়েছে, বিষয়টি সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা

দরকার।

 

পথচারী সামচুল হক শিকদার বলেন, এভাবে সরকারের টাকা অপচয় করা

হয়েছে, এটি দুর্নীতি করে করা হয়েছে। এর সাথে যারা যারা জড়িত সবার বিচার

হওয়া উচিৎ।

 

ইটেরপুল-পাথুবিয়ারপাড় সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী লোকমান বেপারী

বলেন, অত্যান্ত দুঃখের বিষয়, একটি পরিবারের জন্য সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

আশপাশে আর কোন পরিবারও নেই। ক্ষমতাসীন হওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে।

সাবেক সরকারের আওতাধীন থেকে শক্তি খাটিয়ে এই কর্মকান্ড করা হয়েছে।

আমরা চাই, অন্যাকারীদের বিচার হোক।

 

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, আনু মোল্লার ছেলে পুলিশে চাকুরির

সুবাদে তার বাড়ির সামনেই সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। কালভার্ট সেতুটি

দিয়ে শুধুমাত্র ওসির পরিবারের লোকজনই চলাচল করতে পারবেন। অন্যবাড়ি

কিংবা অন্য এলাকার কেউ এই সেতুব সুবিধা পাবেন না। বিষয়টি খুবই

হতাশজনক।

 

অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা দাবি করেন, কালভার্ট সেতু নির্মানের

ব্যাপাবে তিনি কিছুই জানেন না। যৌথ পরিবার হওয়ায় বাড়িটি নির্মাণ করেছে

তার বাবা আনু মোল্লা। তার বাবার বাড়ির সামনে কালভার্ট সেতুটি নির্মাণ করায়

তিনিও ক্ষুব্ধ। অন্যকোথায়ও সেতুটি নির্মাণ না করে আমার বাবার বাড়ির সামনে

সেতু নির্মাণ করায় ঠিকাদারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ঠিকাদারও বিষয়টি

এড়িয়ে যায়। এলাকার মানুষ না জেনেই আমার উপব এমন মিথ্যে অভিযোগ

দিচ্ছে। আমি কালভার্ট নির্মানের ব্যাপারে কিছুই জানি না।

 

একটি বাড়ির জন্য একটি সেতু নির্মানের কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের জবাব

দিতে পারবে সংশ্লিষ্ট দফতর। এছাড়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা

প্রকৌশলী কিভাবে এমন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সেটি আমার বোধগম্য নয়।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ