দখল আর দুষনে অস্তিত্ব হারিরে বাওরা মাদারীপুরের বরিশাল খালটি উদ্ধারে নেমেছে প্রশাসন।
একদল তরুণদের সহযোগিতায় শুরু হয় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযান চালিয়ে বাবার কথা জানায় তরুণরা। আর খালটির পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও এগিয়ে আসার আহবান জেলা প্রশাসনের।
জানা যায় মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় এই ৮ কিলোমিটার একালাজুড়ে বরিশাল। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অস্থিত্ব সংকটে।
দীর্ঘদিনে সংস্কার না হওয়ায়, দখল আর দুষনে বন্ধ হয়ে যায় খালের পানি প্রবাহ। ময়লা-আবর্জনায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। একইসাথে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।খালটি উদ্ধারে নেয়া হয় উদ্যোগ। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে কুকরাইল এলাকায় শুরু হয় কার্যক্রম। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন-এর একদল তরুণ অংশ নিতে পেরে খুশি তারা। পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস জনপ্রতিনিধিদেরও।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ এবং এলজিইডি’র যৌথ উদ্যোগে বরিশাল খালের দুই পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা, কচুরিপানাও পরিস্কার করা হয়। সে সময়ে খালটি খননের উদ্যোগ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
শুধু পরিস্কার-পরিচ্ছনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আশপাশের দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তা না হলে আবারও অস্থিত্ব সংকটে পড়তে পারে এই বরিশাল খাল।
বিডি ক্লিন-এর সদস্য মো. শাকিব হোসেন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খাল টিকিয়ে রাখার কোন বিকল্প নেই। এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশান ও যুব উন্নয়ন অধিদফতর যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়ে তাদের সাথে কাজ করছি। এমন কাজ করতে পেরে আমরা বিডি ক্লিন-এর সদস্যরা সবাই খুশি।
মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নাল তালুকদার বলেন, অযত্ন আর অবহেলায় বরিশাল খালটির এখন কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ ছোটবেলায় দেখেছি এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌযান চলাচল করছে। এই খালটির পুনরায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হোক। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানিয়া ফেরদৌস বলেন, খালটির পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। প্রশাসনের একার পক্ষে এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আশপাশের বাসিন্দাদেরও সচেতন হতে হবে। ময়লা আর আবর্জনা খালের ভেতর না ফেললে এর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।