১৮ জুন বুধবার শেরপুর জেলায় শ্রীবরদীতে নিখোঁজ থাকার ২০ ঘণ্টা পর একটি মৎস্য খামারের পুকুরে ভেসে থাকা অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দু’জনই স্থানীয় একটি নুরানী মাদরাসার শিক্ষার্থী। বুধবার (১৮ জুন) সকালে উপজেলার তাতিহাটি ইউনিয়নের বটতলা মৃদাবাড়ি এলাকা থেকে উলঙ্গ অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলো- স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার (৭) এবং অটোরিকশা চালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন (৬)।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে শিশুদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। পরে স্থানীয়ভাবে অনেক খুঁজেও তাদের সন্ধান না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে পোস্ট করে সন্ধান দাবি করা হয়। এছাড়াও সারারাত মাইকিং করা হয়। এদিকে আজ সকাল ৭টায় বটতলা মৃদাবাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামারে তাদের মৃত অবস্থায় ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে। স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেনের জমিতে তৈরি করা পুকুরটি লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করছেন মোস্তফা মিয়া নামের এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা এটাকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছেন, কারণ শিশু দু’টির বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে। এই পুকুরে মাসখানেক আগেও রহস্যজনকভাবে একজন মারা যায়।
পরে প্রজেক্টের মালিক সেটা ধামাচাপা দেয়। এছাড়াও যে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে শিশুর গোসল করার মতো পরিবেশ নাই এবং সেই পুকুরটি কয়েকটি পুকুরের ভেতরে। এছাড়াও তাদের গায়ের পোশাক এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শিশু দু’টির পরিবার এখনও কোনো অভিযোগ করেনি।
নিহত শিশু সকাল আক্তারের মামা মো. সাগর মিয়া বলেন, সকালের আম্মা ওই এলাকায় ব্র্যাক সেন্টারে হস্তশিল্পের কাজ করে। সেই কারণে সে তার মায়ের কাছে যেতে পারে। সেই সময় গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যেতে পারে। ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে থানায় খবর দেই এবং নিজেও ঘটনাস্থলে আসি। আমার কাছে বিষয়টা পানিতে ডুবে মরার মতই মনে হচ্ছে।
শিশু স্বপ্নার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, আমি গতকাল ঢাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে ঢাকা যাইনি। এরপর থেকে খোঁজাখুঁজি করছি। মাইকিং করছি। কোনো খোঁজ খবর পাচ্ছি না। আজকে সকালবেলা মেয়ের লাশ পেলাম। কীভাবে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাচ্চা দু’টির গায়ের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা চলমান আছে।