মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় পুলিশের ১৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত মাদারীপুরে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত শেরপুরে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুথানে শহীদ পরিবারগুলোর মাঝে সঞ্চয়পত্র বিতরন শেরপুরে ২৭৬ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার জামালপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন , সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও সামাজিক সমস্যা নিরসনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বকশীগ‌ঞ্জে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বৃদ্ধি ও ঝরে পড়া রোধে শিক্ষক-অভিভাবক সমাবেশ রৌমারীতে ২২ হাজার ১০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক কানাইপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক কারবারি কুটি মিয়া বিপুল অস্ত্র ও মাদকসহ আটক ফরিদপুরে পদ্মায় ধরা পড়ল ৪২ কেজি ওজনের বাগাড়, বিক্রি হলো ৬২ হাজার টাকায় রৌমারীতে আবাদি জমির মাটি কেটে বিক্রি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে ট্রাক্টর জব্দ

বকসিগঞ্জ দশানী নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা মানুষ

বোরহান উদ্দিন , জামালপুর জেলা প্রতিনিধি

সংবাদটি শেয়ার করুন....

২৪ মে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় দশানী নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় ভাঙ্গনে মানুষ দিশেহারা।

বারবার নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এসব মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়ছে। ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও ভারী বর্ষণে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ৮টি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহের টানা ভাঙনে অনেক পরিবারই এখন নি:স্ব। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম হতাশায় ভুগছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা।

নদী ভাঙনে মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরা কান্দি, আইরমারী মন্দী পাড়া, উজান কলকিহারা, কলকিহারা ও খাপড়া পাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। অপরদিকে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী, বাংগাল পাড়া ও বালুগ্রামের ফসলি জমিও বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে।

ইতোমধ্যে মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরা কান্দি বাজার, একটি মসজিদ ও একটি গ্রামীণ রাস্তা নদীতে ভেঙে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে মন্দীপাড়ায় অবস্থিত এলইজিইডির একটি ব্রিজ, মন্দীপাড়া বাজার ও শত শত বিঘা ফসলি জমি এবং বাড়ি ঘর।

নদী ভাঙনের ফলে বসতভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে পরিবারগুলোর। নদী ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ না থাকার কারণে ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ দুর্দশায় পড়লেও এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

 

স্থানীয়দের দাবি মেরুরচর ইউনিয়নের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করায় নদী দশানী ও শাখা নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দেয়। এ কারণেই আরও বেশি ভাঙছে দশানী নদী। এবারের ভাঙনে নদীর দু’পাড়েই ভাঙন শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

এসব পরিবার বার বার নদী ভাঙনের শিকার হওয়ায় আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন। অবিলম্বে বাঁধ নির্মাণ ও ডাম্পিং ফেলে এই গ্রামগুলোকে ভাঙন থেকে রক্ষার দাবি জানান এলাকাবাসী।

ভাঙন কবলিত ঘুঘরা কান্দি গ্রামের কৃষক শের আলী, মোতালেব হোসেন, মকবুল হোসেন বলেন, দশানী নদীর ভাঙনে আমরা নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। বার বার ভাঙনের ফলে মানচিত্র বদলে যাচ্ছে এই এলাকার। আমরা ভিটা মাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে বিপদের মধ্যে রয়েছি। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

মেরুরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান, ঘর বাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শিগগিরই ডাম্পিং করা না হলে এই পাঁচ গ্রামের কোন অস্তিত্ব থাকবে না। তাই আমরা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সুমন জানান, ভাঙন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করতে ত্রাণের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, মেরুরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে তা আমরা অবগত হয়েছি। যেসব পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে এবং ভাঙন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সংবাদটি শেয়ার করুন....



আমাদের ফেসবুক পেজ